সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.

অধ-ভূত

সন্দীপ সেনগুপ্ত 

 

 

 

বুধবার সকাল আটটা, এখনো কোলবালিশ আর বিছানার সাথে মন কষাকষি চলছিল I হয়তো আরও আধাঘন্টা কাটিয়ে দিতাম , কিন্তু তন্ময়ের ফোন এসে সব ভেস্তে দিলো I গলাটা শুনে আমিও ঘাবড়ে গেলাম I " ভাই খুব বিপদে পড়েছি, তুই আজ রাতেই চলে আয়ে, আসলে সব বলবো I কিন্তু দেরি করিস না I স্টেশন থেকে টানা রিক্সা নিয়ে পীর সাহেবের বাগানবাড়ি আসবি I গত মাসে যে ব্যাগটা রেখে এসেছি, সেটা নিয়ে আসিস I" ব্যাস লাইন কেটে দিলো I একটু ধাতস্ত হয়ে ভাবলাম ব্যাটা নির্ঘাত ইয়ার্কি মারছে I আমাদের সদ্য কলেজ লাইফ শেষ হয়েছে I বিকম পাস করে হটাৎ এই চাকরিটা পেয়ে যায় তন্ময় I কাগজের বিজ্ঞাপন দেখে চলে যায় ইন্টারভিউ দিতে I ওই এঁদো পাড়াগাঁয়ে আমি যাবো না I " দেখ ভাই বাবা আর মেসের ভাড়া গুনতে পারবে না জানিয়ে দিয়েছে, যদি চাকরি না পাই, তাহলে সেই দেশের বাড়িতে গিয়ে মুদির দোকানে বসতে হবে , আর ইন্টারভিউ দিতে যেতে ক্ষতি কি , দিলেইতো আর চাকরিটা পেয়ে যাচ্ছিনা "  

 

                মেসের একটা ঘরে আমি আর তন্ময় ছিলাম প্রায় তিন বছর I আমি এখন বিসিএসের প্রিপারেশন নিচ্ছি , চাকরির বাজার সকলেই জানি I কিন্তু তন্ময় চাকরিটা লাগিয়ে দিল I যেদিন গেল তার পরদিন দুপুরে একটা ল্যান্ডলাইন থেকে ফোন করেছিল " ভাই আজ থেকেই জয়নিং, এক সাহেবের বিশাল জমিজমা আর ব্যবসার একজন একাউন্টেন্ট লাগবে , এই বাজরে বিশ হাজার টাকা দেবে , পুরো দমে লেগে পড়লাম I  সপ্তাহে দুদিন ছুটি , চাইলে জমিয়ে একেবারে মাসের শেষে এক হপ্তাও নিতে পারবো I একেবারে এই মাসের মাইনে নিয়ে সামনের মাসে যাচ্ছি I” পাক্কা এক মাস পর গত মাসে তন্ময় এসেছিলো I শনি আর  রবিবার পুরো হৈহৈ করে কাটিয়ে , দুটো নাইট শো মেরে , সিরাজের বিরিয়ানি সাঁটিয়ে আবার সোমবার দুপুরে বেরিয়ে গেল I

 

                মনটা বেশ খারাপআমি নিজেই বাবার টাকায় চলছিটাকা থাকলে ওকে ঐখানে যেতেই দিতাম না I অনেক চেষ্টা করেছিলাম ওকে আটকাতে I বললাম কষ্টেশিষ্টে দুজনে টেনেদেব, কলকাতায় একটা হিল্লে হয়ে যাবে I কিন্তু ওকে বোঝানো কারোর সাধ্য নয়  অসম্ভব সাহসী আর চূড়ান্ত নাস্তিক I বেশ কয়েকবার কল করলাম তন্ময়কেকিছুতেই যোগাযোগ করা গেলনা I কি মড়াখেকো জায়গা রে বাবাবেশির ভাগ সময় লাইন পাওয়া যায়না I না আর সময় নষ্ট করা যাবে না , চট করে স্নান করেকোনো রকমে পেটে কিছু দিয়ে রওনা দিলাম I হাওড়া থেকে লোকাল ট্রেন ধরে নামতে হবে ঘুষগুসিয়া স্টেশনে । 

0 comments: