সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.

 স্মৃতিতে উজ্জ্বল বইমেলা 

তিয়াশা রায় 

স্মৃতির দর্পনে কত কিছুই ভেসে ওঠে সকাল থেকে রাত, রাত থেকে সকাল। তবু বইমেলার স্মৃতি মনে এক অন্য অনুভূতির সঞ্চার করে।

শৈশবে 'হাতে-খড়ীর' মধ্যে দিয়ে  আমরা বইয়ের সাথে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ হই। সেদিন থেকে শুরু হয় বইয়ের সাথে এক অনন্ত পথ চলা। ধীরে ধীরে বই পড়া হয়ে ওঠে অভ্যাস। অভ্যাস বদলে যায় নেশায়, আর সে নেশা টেনে নিয়ে যায় বই দের মেলায়। যেখানে শুধু বই আর বই ; নানান রকমের বই, নানান বিষয়ে বই । বই মেলা যেন বইয়ের ই এক কল্পনার দেশ। যে দেশে ইচ্ছা মত বইকে ছোঁয়া যায়,  বই পড়া যায় বই কেনা যায়। 
             সারাবছর দোকানে বই কেনা হলেও বইমেলায় বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলে ঘুরে ঘুরে বই কেনার মধ্যে যে সুপ্ত তৃপ্তি থাকে, তাতে সমস্ত বইপ্রেমীরা এক বাক্যে সম্মতি জানাবেন, এ বিষয়ে কোনো দ্ধিধা নেই। বই ছুঁয়ে দেখার প্রাপ্তি তো আছেই, তার সাথেই  আরও এক পরম প্রাপ্তি হত বইমেলায়, তা হল পছন্দের লেখকের বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠায় লেখকের স্বাক্ষর। এই প্রাপ্তি বইমেলা ছাড়া অন্য কোথাও পাওয়ার উপায় থাকে না।
          কলেজ ছুটি হলে আমরা সবাই যেতাম বইমেলা। আমাদের মফস্বলে বইমেলা শুরু হত দুপুর দুটো। তিনটে নাগাদ জমে উঠত বইমেলা। শীতের রোদ গায়ে মেখে বইমেলা ঘোরার সে এক অনন্য অনুভূতি। প্রথমেই আমরা যেতাম গল্প-উপন্যাসের  স্টলে, সেখান থেকে একের পর এক স্টল ঘুরে ঘুরে বইকেনা। এক সময় বইকেনার নেশা এমন চেপে বসত, বাড়ি ফেরার বাস ভাড়া ও চলে যেতে বইকেনার আনন্দযঞ্জে। দেখা হত চেনা শোনা প্রচুর মানুষের সাথে। সবাই হয়ত বই কিনতেন না, বই ছুঁয়ে দেখতেন, পড়ে দেখতেন কিছু লাইন অথবা কয়েকটা পৃষ্ঠা। প্রতি বছর বইমেলায় আমাদের স্কুলের ইংরেজি স্যারের সাথে দেখা হত,  প্রতিদিন উনি বইমেলায় আসতেন, থাকতেন দুপুর থেকে  সন্ধ্যা পর্যন্ত। বিভিন্ন স্টলে গিয়ে বই পড়ে পড়ে দেখতেন, অথচ  উনাকে বই কিনতে খুব কম মানুষই দেখেছেন।
      দুপুর পেরিয়ে যত সন্ধ্যা নেমে আসত, বইমেলা আরো জমজমাট হয়ে উঠত। নামী- অনামী সমস্ত লেখকরা আসত। তাদের ঘিরে থাকত তাদের মুগ্ধ পাঠকরা। আর আসত ফেরিওয়ালারা। সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বইমেলার মনোমুগ্ধকর পরিবেশে আরো কিছু প্রাণবায়ুর সঞ্চার করত।  বইমেলায় আমরা সকলে হারিয়ে যেতাম; বইয়ের মধ্যে,  বইয়ের নেশায়।

0 comments: