সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.



শেষ আবদার 

অমিত দত্ত 

ইলেকট্রিক চুল্লির ভিতর শ্যামলীর দেহ ঢোকানো হয়েছে এই মিনিট দশেক হল। অরিত্রবাবু শ্মশানের ধারে গঙ্গার গা ঘেঁষে যে সিমেন্টের চেয়ারগুলো আছে, তারই একটাতে বসে ডুবন্ত সূর্যের দিকে  তাকিয়ে ছিলেন। পরণে পাজামা-পাঞ্জাবী। কোঁচকানো, ময়লা, কিন্তু পরম ভালোবাসা আর তৃপ্তি মেশানো। এ তো শ্যামলীরই পছন্দ করে কেনা।

   বিধ্বস্ত চোখে অরিত্র ঘোষাল ডুবন্ত সুর্যের রক্তিম আভার দিকে তাকিয়ে ছিলেন। গঙ্গার বহমান জল দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার লাল হয়ে উঠেছে এই আশা নিয়ে যে সে নিজে যতই নীরবে পঙ্কিলতা, মলিনতা ও পাপ বহন করে চলুক না কেন, অন্তত কেউ একজন আছে যে নিয়ম করে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। বিদ্রোহের রঙ যে লাল! কিন্তু অরিত্রবাবুর বিদ্রোহ ঘোষণা করার কোন মানসিক শক্তি অবশিষ্ট নেই। অন্তত এই মুহূর্তে।

   শ্যামলীর সাথে তাঁর বিয়ে হয়েছে পঁয়ত্রিশ বছর হয়ে গেল। তখন তিনি এল অ্যান্ড টি তে সবে জয়েন করেছেন। জুনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে। শেক্সপীয়র সরণীতে অফিস। শ্যামলীর সাথে সেই সময়েই বিয়ে হয়। বাবা গত হয়েছেন একবছর হল। দু কামরার ভাড়া বাড়ীতে মাকে নিয়ে আর শ্যামলীর সাহস অবলম্বন করে তাঁর জীবণের লড়াই শুরু হয়েছিল। প্রথম থেকেই শ্যামলী তাকে উৎসাহ দিয়ে আসছিল যে করেই হোক নিজেদের একটা বাড়ি করতে হবে। শ্যামলীর কথা এখনও তাঁর কানে বাজছে-“ নিজের বাড়ি মানে নিজের অস্তিত্ব। তুমি যতই ঘর সাজানোর জন্য ফার্ণিচার কিনে আনো না কেন, মনে রাখবে এই ঘর কিন্তু আমাদের নয়, আর এই সংসারও দাঁড়িয়ে আছে নদীর ভাঙ্গা পাড়ে।‘’

   অরিত্রবাবু প্রতিবাদ করতেন মাঝে মাঝে-“ কিন্তু সোফাসেটটা তো দরকার। বাড়িতে কেউ এলে ওই হাতল-ভাঙা চেয়ার আর মোড়া ছাড়া বসতে দেবার মতন তো কিছুই নেই। তুমি সেটাও কিনতে দিচ্ছ না।‘’

    শ্যামলী কিনতে দিত না। প্রয়োজনের সীমানাটা কমিয়ে এনেছিল নিষ্ঠুর ভাবে। লক্ষ্য শুধু একটাই। নিজের বাড়ি। তবে অরিত্রবাবু খেয়াল করেছিলেন শ্যামলী গাছ খুব ভালোবাসে। পথে চলতে চলতে বা বাজারে যাওয়ার সময় কোন নার্সারীর সামনে দাঁড়িয়ে যেত, মুগ্ধ চোখে ফুল দেখত, গাছ স্পর্শ করত। অরিত্রবাবু যদি বলতেন-“ পছন্দ হয়েছে যখন একটা তো নেওয়াই যায়। ওই দোপাটির চারাটা কত পড়বে ভাই?” শ্যামলী অরিত্রবাবুর হাত চেপে ধরতেন। বেরিয়ে আসতেন সঙ্গে সঙ্গে। অরিত্রবাবু তখন থেকেই আর একটা সঙ্কল্প মনের একান্ত গোপন কোণে রেখে দিয়েছিলেন।

    পাঁচবছর এভাবে কেটে গিয়েছিল একটা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য তাড়া করতে করতে। শ্যামলী সংসার গুছিয়েছিল তার মত করেই- না অতিরিক্তর আতিশয্য না অভাবের অস্থিরতা। অরিত্রবাবুর মা আশ্চর্যজনকভাবে সংসারের কর্তৃত্ব শ্যামলীর হাতেই তুলে দিয়েছিল। অরিত্রবাবু মনে করতে পারেন না কোনদিন শাশুড়ী বউয়ের কোন ঝগড়া হয়েছিল কিনা। শুধু মাঝে মাঝে একটা আক্ষেপের সুর শোনা যেত-“ মরার আগে কি নাতি নাতনীর মুখটা দেখে যেতে পারব না?”

   বিয়ের পঞ্চম বর্ষপূর্তির দিন দুই পরে অরিত্রবাবুর প্রমোশন হয়। তিনি সিনিয়র অ্যাকাউন্ট্যান্ট হন। বাড়ি ফিরে যখন তিনি শ্যামলীর হাতে প্রমোশনের লেটারটা তুলে দেন, শ্যামলীর চোখে তিনি  আনন্দের সাথে লক্ষ্যপূরণের স্বপ্ন সত্যি হবার আশা দেখতে পান। সেই রাতে তিনি শ্যামলীকে যতটা গভীরভাবে পেয়েছিলেন ততটা আগে কখনও পান নি।

    -“ আর আধঘন্টা লাগবে ।”

    -“অ্যাঁ”? অরিত্রবাবু বোধহীন চোখে পরিমলের দিকে তাকালেন। পরিমল পাড়ার ছেলে।

 

    -“বলছি, প্রায় হয়ে এল। দাহ হতে আর আধঘণ্টা লাগবে। এতটাও সময় লাগত না যদি চুল্লীতে আগে কয়েকটা দাহ হয়ে যেত। গরম থাকত। কাকিমাই প্রথম কিনা”।

    -“ও”।

    -“অর্জুন কিন্তু আসতে পারত। মা বলে কথা! কি এমন কাজ যে মায়ের মৃত্যুতেও ছুটি পাওয়া যায় না?” পরিমল গামছাটা কোমড়ে কষে বেঁধে নিয়ে শ্মশানের পাশে চায়ের দোকানের দিকে এগিয়ে গেল। অরিত্রবাবু সামনে তাকালেন। সূর্য ডুবে গেছে। গঙ্গা অন্ধকারে বয়ে চলেছে। শ্মশানঘাটের লাইট জ্বলে উঠেছে। এই দিকটায় আলো একটু কম আসে। থাক, অন্ধকারই ভাল। অন্ধকার মানুষকে ভাবতে সাহায্য করে। অন্ধকার মানুষকে স্মৃতিপথে হাঁটতে সাহায্য করে।     

     প্রমোশনের একবছর পরেই উত্তর দমদমে চার কাঠার একটি প্লট তিনি কিনে নিয়েছিলেন। শ্যামলী চেয়েছিল দু-কাঠার জমিই কিনতে। কিন্তু তিনি যে গোপন ইচ্ছা শ্যামলীর অগোচরে রেখেছিলেন তা পূর্ণ করতে কিছু বেশি জমিই লাগবে। সঞ্চয়ের বেশির ভাগটাই জমি কিনতে বেরিয়ে যাওয়াতেও অরিত্রবাবু অখুশি ছিলেন না। ব্যাঙ্ক লোন নিয়ে দু-কামরার একটি একতলা বাড়ি করতেও আর দেরি করলেন না। এক একটি ইঁট দিয়ে যখন তাদের স্বপ্নের ইমারত বাস্তব জমির উপর উঠছিল, শ্যামলীর মুখের তৃপ্তির আভা অরিত্রবাবুর মন শান্তিতে ভরিয়ে তুলেছিল। যেদিন শুভ গৃহপ্রবেশ হল, তাঁর মনে আছে, শ্যামলী প্রতিটা ঘরের দেওয়ালে হাত বুলাতে বুলাতে মনে হয় বাড়ির আত্মার সাথে সম্পর্ক স্থাপণের চেষ্টা করছিল।

    -“এটা আমাদের বাড়ি! অন্য কারুর নয়, এটা শুধু আমাদেরই বাড়ি। বল, কিছু বলছ না যে?”

   অরিত্রবাবু কোন কথা না বলে শ্যামলীর দুটো হাত নিজের মুঠোর মধ্যে চেপে ধরেছিলেন।

 

    গঙ্গার দিক থেকে ঠাণ্ডা হাওয়ার একটা দমক এল। অরিত্রবাবুর চুলগুলো চশমার উপর নেমে এসে দৃষ্টিপথে বাধার সৃষ্টি করলো। তিনি চশমা খুললেন, চুলগুলোকে কাঁপা কাঁপা হাতে কপাল ও চোখ থেকে সরিয়ে দিলেন। হাতটা ভেজা ভেজা ঠেকাতে তিনি বুঝতে পারলেন অজান্তেই চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে নামছে। চোখ মোছার সাথে সাথেই নাকে একটি পরিচিত গন্ধ এল। কদম ফুলের গন্ধ। বুক ভরে এর তীব্র গন্ধ টেনে নিলেন এবং এই গন্ধই আবার তাঁকে স্মৃতিপথে পিছনে নিয়ে গেল

 

    গৃহপ্রবেশের একসপ্তাহ পরেই তিনি এক সন্ধ্যেবেলায় অফিস থেকে ফিরে আসার পথে দেবদারু, কৃষ্ণচূড়া, কদম ও টগর গাছের চারা কিনলেন। বাড়িতে ঢুকেই তিনি শ্যামলীকে জোরে ডাকাডাকি  শুরু করেছিলেন এই জীবন্ত উপহার ওর হাতে তুলে দেবার জন্য। শ্যামলী বেরিয়ে এসেছিল একটু পরে। মুখটা শুকনো ছিল। পাশে মা। বোঝাই যাচ্ছিল যে শরীরটা খারাপ। কিন্তু যখন গাছের চারাগুলো শ্যামলী দেখল, ওর মুখচোখ এক অদ্ভুত ভালবাসা ও আনব্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। অরিত্রবাবু বুঝেছিলেন এর চেয়ে ভাল উপহার তিনি শ্যামলীকে আর কোনদিন দেন নি। পরেরদিন ছিল রবিবার। দুজনে একসাথে যে যত্ন আর মমতার সাথে গাছের চারাগুলো মাটিতে বসিয়েছিলেন তা তিনি আজও অনুভব করতে পারেন। তিনি গাছগুলোতে জল দিতে দিতে ফিসফিস করে শ্যামলীকে বলেছিলেন-

  “এইবার বাড়ি স্ম্পূর্ণ হল। তোমাকে বলছি শোন, এই চারা একদিন বৃক্ষ হবে আর আমাদের প্রেমের সাক্ষী হয়ে থেকে যাবে। দেবদারু আমাদের ভালবাসার ঐতিহ্য, কৃষ্ণচূড়া গভীরতা, কদম সুগন্ধ আর টগর স্নিগ্ধতা বহন করে চলবে বছরের পর বছর”।

   শ্যামলী গভীর আশ্লেষে তাঁর ঠোঁটে চুমু দিয়েছিল।

  

   অরিত্রবাবু ভেবেছিলেন তিনি শ্যামলীকে সবচেয়ে বড় উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু শ্যামলী তাঁকে এর চেয়েও বড় উপহার দিয়েছিল। পরের বছরই অর্জুন এসেছিল। নামটা মা-ই রেখেছিল। বড় আদর আর স্বপ্নভরা নাম। তিনি আর শ্যামলী নিজের সাধ্যের বাইরে গিয়েও অর্জুনের শখ পূরণ করার চেষ্টা করতেন। চেয়েছিলেন ও বড় হয়ে উঠুক, অনেক বড় হয়ে উঠুক কোনরকম অভাব, অভিযোগ ছাড়াই। একটা সুন্দর স্মৃতি এখনও মনে গাঁথা আছে। অর্জুন তখন ক্লাশ নাইনে পড়ে। ওর আবদার মতন কৃষ্ণচূড়া আর দেবদারু গাছের মাঝখানে একটা দোলনা টাঙানো হয়। মা ও ছেলে বিকেলে সেই দোলনায় বসত। মাথার উপর কৃষ্ণচূড়া ফুল ঝরে পড়ত। আর অরিত্রবাবু কোন কোনদিন পেছন থেকে দোলনায় দোল দিতেন। স্বপ্নের মতন লাগত। বলতেন-“অর্জুন, কখনও লক্ষ্য থেকে নজর সরিও না বাবা”।

   না, অর্জুন লক্ষ্য থেকে নজর সরায়নি। সিভিল ইঞ্জিনীয়ারিং-এ এম.টেক করার পরই একটি মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানীতে অর্জুন চাকরী পেয়ে যায়। একবছর পরই স্কটল্যান্ডে কোম্পানীর একটি প্রজেক্টের কাজ নিয়ে সে বিদেশ পাড়ি দেয়। প্রজেক্টটা ছিল একবছরের। শ্যামলী খুব কেঁদেছিল। শরীরটাও তখন তার খুব একটা ভাল যাছিল না। বারবার বলছিল-

  “আমায় ছেড়ে যাবি বাবা? তোর মুখ না দেখে যে একটা দিনও থাকতে পারি না। একটা বছর কীভাবে কাটব?”

   অর্জুন আশ্বাস দিয়েছিল-

    “মা,চিন্তা কোর না। তোমার সাথে প্রতিদিন আমি স্কাইপে কথা বলব। একটা বছর দেখতে দেখতেই কেটে যাবে”।

    হ্যাঁ, বছর কেটে গিয়েছিল ঠিকই, কিন্তু অর্জুন আর দেশে ফেরেনি। একটা প্রজেক্ট শেষ হতেই আরও একটা প্রজেক্টের সাথে সে জুড়ে গিয়েছিল। ওয়ার্কিং ভিসা থেকে ক্রমে সিটিজেনশিপ নিয়ে নিয়েছিল। প্রথম প্রথম স্কাইপে রোজই কথা হত। ছবি, ভিডিও পাঠাতো। সবই ধীরে ধীরে কমতে থাকলো। স্ত্রীর সাথে পরিচয়ও করিয়েছিল কম্পিউটারের স্ক্রীনে। শ্যামলীর চোখের জল ধীরে ধীরে শুকিয়ে গিয়েছিল। কথা বলত খুব কম। মাঝে মাঝে কেঁপে উঠত।

    হসপিটালে ভর্তি হবার একসপ্তাহ আগের কথা। দুপুরবেলায় বিছানায় শুয়ে ছিল। অরিত্রবাবু পাশে বসে খবরের কাগজ পড়ছিলেন। হঠাৎ শ্যামলী তাঁর হাত চেপে ধরেছিল।

    “অর্জুন আর আসবে না বল?”

     অরিত্রবাবু চুপ করে ছিলেন। কিছু প্রশ্নের উত্তর হয় না।

    “বাগানের দক্ষিণ কোণে এখনও কিছুটা ফাঁকা জায়গা আছে। ওখানে এমন কিছু বসিও যাতে ফাঁকা জায়গাটা ভরাট হয়ে যায়”।

 

          “কাকু, হয়ে গেছে। এইবার আসুন। বাকি কাজটা সারতে হবে”। পরিমলের ডাকে অরিত্রবাবুর  হুঁশ ফিরল। যন্ত্রের মতন এগিয়ে গেলেন যেখানে ডোম দাঁড়িয়ে আছে চিতাভস্ম নিয়ে। গঙ্গাজল দিয়ে চিতাভস্ম ঠাণ্ডা করা হল। ডোম বেছেবুছে কিছু হাড় আর নাভিকুন্ড একটা মাটির পাত্রে ভরে দিল। এইবার বিসর্জনের পালা। গঙ্গায় নামার সিড়িঁতে দাঁড়িয়ে অরিত্রবাবু পিছন ফিরে পরিমলকে বললেন-

  “বাবা, আর একটা মাটির ভাঁড় আনতে পার?”

  “কেন কাকু?”

  “লাগবে”।

মিনিট পাঁচেক পর পরিমল একটি মাটির পাত্র নিয়ে এল। অরিত্রবাবু কিছুটা চিতাভস্ম ওই মাটির পাত্রে ঢাললেন। গঙ্গামাটি দিয়ে মুখটা বন্ধ করলেন। বাকিটা বিসর্জন দিলেন গঙ্গাবক্ষে।

 বাড়ি ফেরার সময় পরিমল বলল-

  “কাকু আজ রাত্রে আমরা দু-একজন আপনার বাড়িতেই থাকি। বাড়িতে তো আর কেউ নেই”।

  “না বাবা, তোমাদের অনেক ধন্যবাদ। আমি একটু একা থাকতে চাই”।

     বাড়ি ফিরে অরিত্রবাবু ভেজা জামাকাপড় না ছেড়েই বাগানে গেলেন। দোলনাটা এখনও ঝুলছে। একটা ডাল দিয়ে মাটি খুঁড়ে ওই চিতাভস্মের পাত্রটা দোলনার নিচে পুঁতে দিলেন। তারপর উঠে বাগানের দক্ষিণ কোণে গেলেন। হ্যাঁ, কিছুটা জায়গা ফাঁকা আছে।

     পরেরদিন নার্সারী থেকে একটি শিশু গাছের চারা নিয়ে এসে ওই দক্ষিণ কোণে বসালেন। জল দিলেন। পরম মমতায় গাছের পাতায় হাত বোলালেন। এই শিশু একদিন বড় হবে।।  

0 comments: