সম্পাদকের কলমে
লেখা পাঠানোর জন্য
Total Pageviews
গীতা
কৃপাণ মৈত্র
ডাক্তার জবাব দিয়েছেন। ঝাপসা চোখে রতন বারি পরিজনদের চেনার চেষ্টা করছে।
ঠাকুর মশাই গঙ্গা জলে গীতা শুদ্ধ করে সবে পড়তে শুরু করেছেন, রতন বারি অস্থির হয়ে ঘন ঘন শ্বাস ফেলতে লাগল।
রতনের বউ বলল, যে লোকটা সারা জীবন সুদের কারবার করে গেল, ভয়ে গীতায় হাত দিল না, সে কখনো মরণ কালে গীতা শুনতে চায়!
ঠাকুরমশাই বললেন, জীবনের দেনা পাওনার হিসেব এখনো মন জুড়ে। ওর মুক্তি নেই।
ঠাকুরমশাই সবে গীতা পাঠ শুরু করেছেন রতন বারির বড় ছেলে মহেশ হাত তুলে ঠাকুর মশাই কে থামিয়ে দিয়ে ইশারায় গীতা পাঠ বন্ধ করতে বলল। সে ছুটে গেল ঘরের ভেতরে। একটু পরে একটা জাবদা খাতা এনে বাবার কানের কাছে মুখ এনে পড়তে লাগল কার কাছে সুদ আসল বাবদ কত বাকি। রতন বারির চোখ বড় হতে হতে যেন ঠেলে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
- কোন নাম ছেড়ে গেলি নাকি?
- ঠিক বলেছ মা, রসিক শাপুই-এর নাম বলা হয়নি। এ যে দেখছি অনেক বাকি।
রসিক শাপুই কাছে দাঁড়িয়ে ছিল। সে ঠাকুরমশাই-এর হাত থেকে গীতাটা টেনে নিয়ে বলল,কত্তাবাবা, গীতা ছুঁয়ে কথা দিচ্ছি, সুদে-আসলে সব শোধ করে দেব।তুমি নিশ্চিন্তে ওপারে যাও।
রতন চোখ বন্ধ করল। তার চোখের কোল বেয়ে একফোঁটা জল বিছানায় গড়িয়ে পড়ল। ঠাকুরমশাই মৃদু হাসলেন। মহেশ জাবদা খাতা বন্ধ করে গীতায় ঠৈকাল।তারপর মহেশের মাথায় ছুঁয়িয়ে নিজের মাথায় ঠেকাল।
0 comments:
Post a Comment