সম্পাদকের কলমে
লেখা পাঠানোর জন্য
Total Pageviews
বর- বিভ্রাট
অলোকা বিশ্বাস সাহা
- কি দারুণ মুভি ছিল, তাই না??
- ধুস।
- কি ধুস্।
- তোদের এই মেয়েদের যে বোকা বোকা প্রেমগুলো কি করে ভাল লাগে.. তোদের জন্যই এই সিনেমা হল গুলো টিকে আছে।
- আচ্ছা। আর তোরা পুরুষ গুলো কি? ওই মার দাঙ্গা ঢিসুম ঢাসুম.. হু: ...
- আচ্ছা, আচ্ছা বাদ দে,, চল খাবো.....
- না, আমি খাবো না। তুই খা, আমি বাড়ি যাব।
- কেন, কি হল, রাগ করলি?
- না, আমি রাগ করার কে? আমি তো আর তোর গার্লফ্রেন্ড নই।
- ওরে বাবা, গার্লফ্রেন্ড না হোস, শুধু ফ্রেন্ড তো অবশ্যই।
- আমার দরকার নেই। এই নে তোর পয়সা ফেরত।
- এসব কেন ঠুমরী?
- না মুভিটা তোর যখন ভাল লাগেনি, তাহলে পয়সা নষ্ট করবি কেন?
- আরে আমার ভাল লাগেনি, তোর তো ভাল লেগেছে..
- তাতে তোর কি?
- আচ্ছা, তোর কি এখন ঝগড়া না করলেই চলছে না??
- না, ঝগড়া কিসের....
- শোন, আমার হেব্বি খিদে পেয়েছে, তুই খাবি তো চল, নাহলে ট্যাক্সি নিয়ে বাড়ি চলে যা।
- আমায় একা চলে যেতে বলছিস??
- কি করব, তুই তো আমার কথা শুনবি না..
- দাঁড়া, মা কল করেছে, ,,, হ্যালো মা,,,,, না খাইনি,,,,, হ্যাঁ আছে,,,,,, আচ্ছা আসছি।
চল, প্রবলেম সল্ভ্ড , মা বলল, তোর জন্য খাসির মাংস করেছে..
- দ্যাখ দ্যাখ, ছোটমা আমায় কত ভালবাসে। আর তুই, খালি ঝগড়া করিস।
- সেই-ই, আমি তো তোকে মোটেও বাসি না।
- না, বাসিস না।
- বেশ করি। ট্যাক্সিতে ওঠ, মারতে মারতে বাড়ি নিয়ে যাব।
- উফ্। বউয়ের মতন শাসন করিস এত...
- হুঃ। তোর বউ হতে আমার বয়েই গেছে।
- বাঁচা গেল, আমারও কোন ইচ্ছে নেই, থেকে থেকে পয়সার খোঁটা দিতিস। আর হ্যাঁ, এত পয়সার খোঁটা দিস কেন বল তো?
- বেশ করি। বাজে পয়সা খরচ করিস, তাই বলি..
- আরে। ইনকাম করি, তাই খরচা করি। সঙ্গে করে নিয়ে যাব বলে তো আর পয়সা ইনকাম করি না।
ট্যাক্সি চলছে। আর ওরা অনর্গল কথা বলছে। অর্জুন আর ঠুমরী। ছোটবেলার বন্ধু।
শ্যামলেন্দু চৌধুরী ঠুমরীর বাবা। এককালে বিরাট বসতবাড়ির মালিক ছিলেন। জাহাজের চাকরির অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ এক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব ছিলেন। ভবানীপুরের বিশাল প্রাচূর্য। কিন্তু বিষয় আশয় নিয়ে ভাইদের সাথে বচসার জেরে আজ সবই অতীত। এখন একাংশে আধিপত্য তার। বিষয় বলতে ঐ এক মেয়ে , এক ছেলে, তার স্ত্রী,আর বিধবা বোন কুমুদ।
শ্যামলেন্দু বাবুর বন্ধু অবনীশ মজুমদার, অর্জুনের বাবা। দুই বন্ধুতে হরিহর আত্মা। তিনিও উচ্চপদস্থ ছিলেন, শ্যামবাজারে এক অট্টালিকা বানিয়েছিলেন, স্ত্রী-পুত্র নিয়ে সুখের সংসার ছিল, কিন্তু ভাগ্যের সহ্য হল না।
অর্জুন ক্লাস ফাইভে পড়ার সময়, গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান মজুমদার দম্পতি। ভাগ্যের জোরে ঠুমরীদের বাড়িতেই অর্জুন ছিল সেদিন, নাহলে অনর্থ হয়ে যেত।
তখন থেকে অর্জুনের 'ছোটমা', ঠুমরীর মা, কল্যাণীর কাছেই বড় হয়ে ওঠা। ঠুমরীর সাথে, একসাথে।
ঠুমরীর ভাই, তাতানের সাথে কোন অংশেই স্নেহের কার্পণ্যতা করেননি কল্যাণী। তিনজনেই বড় হয়েছে একভাবে।
কিন্তু একদিন সন্ধ্যাবেলা সব এলোমেলো হয়ে গেল। ঠুমরী আর অর্জুন ক্লাস টেন তখন। লোডশেডিং ছিল বলে তিনজন ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। কিছু পোকা ঠুমরীর হাতের ওপর দিয়ে চলে গেল। ব্যাস্। চিৎকারে সারা পাড়া জেগে গেল। তাতান দৌড়ে নীচের থেকে টর্চ আনতে গেল, বিষাক্ত কিছু যদি হয়, এই আশঙ্কায় বড়দের ডাকতে গেল। ভয়ে ঠুমরী অর্জুনের বুকে সেঁটিয়ে গেছিল। নীচের থেকে সবাই এসে এই দৃশ্য দেখে সবার খেয়াল হল, এরা দুজন বড় হয়ে গেছে।
বিশেষ করে কুমুদ এটা শ্যামলেন্দু বাবুকে ভাবতে বাধ্য করেছিল।
পরের দিনই, সকালবেলা তার ঘরে অর্জুনকে ডেকে বললেন,
-দেখো বাবা, আমি তো মেয়ের বাবা। তুমি আমার ছেলের মতন। আমার বাড়ির মান সম্মান তোমার হাতে। আমি কোন দিক থেকে কোন কার্পণ্যতা করব না আমার দায়িত্ব থেকে। তুমি তোমার বাড়ি চলে যাও বাবা। আমি হরি কে তোমার সাথে পাঠিয়ে দেব। তোমার কোন অসুবিধা হবে না। কথা দিলাম। তোমার যখন খুশি আসবে এ বাড়িতে। এ বাড়ির দরজা তোমার জন্য খোলা। তোমরা বাইরেও যাবে একসাথে, এত বন্ধুত্ব তোমাদের, শুধু এখানে এভাবে আর থেকো না। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। আমায় ভুল বুঝো না বাবা।
.. এই কথাগুলো বলার সাথে সাথে শ্যামলেন্দু বাচ্চা ছেলের মতন হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেছিল। আর তখন তার জোড় হাত দুটো ধরে অর্জুন ঐ ষোল বছর বয়সে শুধুই কেঁদেছিল, বাকরূদ্ধ হয়ে। সেই বয়সে সে সত্যিই বুঝতে পারেনি তার অপরাধটা ঠিক কোথায়।
আজ সে হরি দা'র সাথে শ্যামবাজারের বাড়িতেই থাকে। হরি ওর সব কাজ করে দেয়। অর্জুনের সাথেই থাকে। অর্জুন পড়াশুনা শেষ করার পর একটা চাকরিও পেয়ে যায়। আর ঠুমরীও একটা বাচ্চাদের স্কুলে পড়ায়।
- 'ছোট'মা, চলে এসেছি। শিগগিরি দাও, খুব খিদে পেয়েছে। কি করেছ? লুচি? আহ্। ফাটাফাটি।
এক বাক্যে এতগুলো কথা বলে, আর কাউকে কোন কথা না বলতে দিয়ে টেবিলে বসে পড়ল অর্জুন। সস্নেহে মাথায় বুকে হাত বুলিয়ে দেয় কল্যাণী।
' কল্যাণী, ওকে আরও দাও' ..
বলে ওঠে শ্যামলেন্দু। কুমুদ আরও লুচি এনে দেয়।
কুমুদ, মানুষটির মন ভালো। উনি আসলে একটু প্রাচীনপন্থি। মেয়েরা, মেয়েদের মতন থাকো, একটু ঘর সংসার করো। লজ্জা, সম্ভ্রম, মেয়েদের অঙ্গ। এই আর কি। অর্জুনকে ভালবাসেন ঠিকই। কারণ, উনিও তো খুব ছোটবেলা থেকে দেখছেন ওকে। বাপ মা মরা ছেলে। ওনার খুব ভয় ছিল, ঠুমরী- অর্জুনকে এক বাড়িতে বড় হতে দেখে আশেপাশের লোকেরা কি ভাববে।
- পিসি, দাও, দাও। আমাকেও দাও।
ঠুমরীও বসে পড়ল টেবিলে।
সারারাত বৃষ্টি হওয়ার পর রাস্তা ভেজা আছে। বৃষ্টি থামলেও সূয্যিমামার দেখা নেই। আজ অগত্যা প্রাইভেট বাসটা ধরতে হবে। তড়িঘড়ি বাথরুমে ঢুকবে বলে পা বাড়ায় অর্জুন। হরি বলে ওঠে,
- গিজারটা চালানো আছে, উষ্ণ করে গা এ ঢেলো দাদাবাবু।
- হরি দা, শীতকাল নাকি এখন....
বলেই একটা হাঁচি দিল।
হরিদা আড়চোখে দেখে নিয়ে বলল,
- তোমার মা থাকলেও এক কথাই বলত দাদাবাবু। কাল অত রাতে পুরো কাক ভেজা হয়ে বাসায় ফিরেচো, খেয়াল আচে?
- হরি দা, তুমি আছো বলেই মা কি, বাবা কি, বুঝতেই দিলে না।
- হয়েচে। এখন এসব দুক্কু কতা কয়ে আমায় কান্দিও না। কবে পট করে মরে যাব, তোমার দেখার লোককে তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো তো। ঐ চাঁদপানা মুখটা দেখি, আর প্রাণ জুড়াই। নাতি- নাতনিকে একটু কোলে নিয়ে বেড়াই।
- আমার দেরি হচ্ছে। চললাম।
সশব্দে বাথরুমের দরজা বন্ধ হল।
কিছুক্ষণ স্তব্ধ। তারপরেই হরি চিৎকার শুরু করে দিল।
- আমার হয়েচে জ্বালা। চলে যাব আমি। সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে দেখো। আমার মজা দেখবে বলে আমায় এত জ্বালাও, তাই না? যম ও তো নেয় না।
বাথরুম থেকে অর্জুন,
- আমি না করে দিয়েছি আসতে।
আরও জোরে উঠল হরির গলা।
- তুমি যতই রাগাও আমি রাগব না। তোমায় বিয়ে করতেই হবে। দাঁড়াও, আমি আজই বড়দা কে টেলিফোন করব।
আবার বাথরুম থেকে,
- আমার খাবারটা বাড়ো পিলিজ, হরিদা পিলিজ।
গজ গজ করতে করতে হরি আবার কাজে মন দেয়।
এমন সময়, দরজায় কলিং বেল বেজে উঠল।
বিরক্ত সহকারে হরি দা,
- উফ্। এই হয়েছে বেল। ভেঙে ফেলব একদিন। সক্কাল সক্কাল কাম কায্যি নেই। জ্বালাতন....
দরজা খুলেই গলার স্বর পাল্টে গেল।
- ও মা, ঠুমরী দিদিমণি তুমি..এসো, এসো।
- কি বকবক করছিলে হরি দা?
- এই যে, দাদাবাবুকে বিয়ের কথা বলছিলাম।
- ওকে কে বিয়ে করবে?
- ওরম বলো না গো, দাদাবাবুর মতন ভালো ছেলে পাওয়া যায় নাকি?
- হাসিও না তো। খালি ঝগড়া করে আমার সাথে।
- সে তুমি যাই বলো, ওটা তোমাদের ব্যাপার। ও দিদিমণি, বসো, জলখাবার খাও এখানে।
- হ্যাঁ, খাব তো।
- বাড়ির সবাই কেমন আচে গো? কতদিন পর এলে একানে।
- হ্যাঁ। সবাই ভালো আছে। তুমি এত রোগা কেন হয়েছ গো?
..- আমি খেতে দিই না। তাই।
অর্জুন বাথরুম থেকে টাওয়েল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বেরোল।
হরি শুরু করল,
- দাদাবাবু খালি রসিকতা করে। দিদিমণি এই বয়সে রোগা থাকাই ভাল।
- হরি দা, তাড়াতাড়ি দাও। আজ যা ওয়েদার, বাসটা পেলে হয়। এই তুই যাবি তো, না ডুব মারবি?
- না:, আজ বিকেলে লোকজন আসবে, বাবা তাই বাড়ি থাকতে বলেছে।
- কে আসবে রে?
- আমায় দেখতে।
আপেলে একটা কামড় বসিয়ে অর্জুন একটু থেমে গেল।
- কি? তোর বিয়ে? ব্যাস, গেল....
- কি গেল??
- তোকে যে বিয়ে করবে তার কপাল গেল।
- সকাল সকাল শুরু করলি তো??
- তাছাড়া আবার কি। হু:। সবাই কি আর অর্জুন? যে তোর বায়নাক্কা সামলাবে।
- বাজে বকিস না। তুই আজ আমায় রাগালেও আমি রাগব না।
- তাই নাকি। বাব্বা। মেয়ে একেবারে বিয়ের জন্য পাগল। তবে যাই বল, তোর বিয়েতে জব্বর খাবো। কিন্তু তখন তো তুই পর হয়ে যাবি, আর এরকম আড্ডা হবে না।
- কেন, তখন তো আমরা চারজন হব। তোরও বউ হবে।
- আমার বউ? ছাড়। আর তাছাড়া তোর বর যদি কুমুদ পিসির মত পসেসিভ হয়, তখন?
ঠুমরী চুপ করে রইল।
অর্জুন বুঝতে পেরে সামলে নিল।
- আরে বাদ দে। আজ বিকেলে হেব্বি সাজিস। তুই একটু ওয়েট কর। আমি রেডি হয়ে নিই।
- শোন, বিকেলে আমার সাথে তুইও থাকবি।
- হ্যাঁ। তাহলে আজ আর আমায় অফিস যেতে হবে না।
- ওসব আমি জানি না।
- না রে, আজ তো হবেই না।
- তুই যদি না যাস, আমি ওদের সাথে কথাই বলব না।
- আচ্ছা, আচ্ছা আমি চেষ্টা করব, হয়েছে?
কিন্তু অর্জুন সত্যিই কাজে ফেঁসে গেল। এমন একটা মিটিং শেষমুহূর্তে চলে এল, যে ও বেচারা আর বেরোতেই পারল না। বিকেলে ঐ সময়ে বারবার ঘড়ির কাঁটায় চোখ চলে যাচ্ছিল। আর অর্জুন মনে মনে প্রমাদ গুনছিল, ঠুমরী না জানি কত কিল- ঘুষি তার জন্য জমিয়ে রাখছে। ভাবল রাতে বাড়ি ফেরার সময় ও বাড়ি একবার যেতেই হবে। অফিস থেকে বেরিয়ে ফোনটায় চোখ রেখে দেখল ১৯ টা মিস কল। ১৯ টাই ঠুমরীর। পাগলীটা এতবার ফোন করল, আর কি বিচ্ছিরি কেসটাই না হল। রাতে ও বাড়ি যাওয়ার পর যথারীতি ঠুমরীর সাথে হাতাহাতি, রাগের চোটে সাজগোজ নষ্ট করার কথাই মনে আসেনি ঠুমরীর, আর অর্জুন অনুভব করল, আজ ঠুমরীকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। হ্যাঁ, এই প্রথমবার অনুভব করল অর্জুন।
বাড়ি ফিরে অর্জুনের রাতের ঘুম চলে গেল। বারবার শাড়ি পরা ঠুমড়ীর মুখটা মনে পড়ছিল। ছোটবেলায় যখন তখন ওরা হাত ধরে কত শপথ করে ফেলত। কেউ কাউকে ছেড়ে কোনদিন কোথাও যাবে না। এই শপথটাই বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল। যেদিন ঠুমরীদের বাড়িতে অত বড় অশান্তিটা হয়েছিল, যখন সবাই নীচের ঘর থেকে দৌড়ে ওপরে আসছিল, সেই মুহূর্তে অর্জুন ঠুমরীকে শান্ত করার জন্য হাল্কা করে ঠুমরীকে জড়িয়ে ধরে বলেছিল,' ভয় পাচ্ছিস কেন, আমি তো আছি। ' উত্তরে ঠুমরী বলেছিল, জানি, তাই তো তোর কাছে চলে এসেছি।' ব্যাস্। তারপরেই ঐ ঘটনাটা ঘটে গেল। সবাই ওপরে এসে হ্যারিকেন নিয়ে দেখল দুজনে জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ ভাবল প্রেম, কেউ ভাবল, কি কেচ্ছা।
অর্জুনের এসবগুলো আজকেই বা কেন মনে আসছে, এতদিন তো সেরকম মনে পড়েনি। অর্জুনের মোবাইলে ঠুমরীর ছবিগুলো আজকেই বা কেন বারবার দেখতে ইচ্ছে করছে। এরকম কেন হচ্ছে? তবে কি.......তবে কি..... না না, ছি ছি.. এসব কি ভাবছে অর্জুন?
কে জানে ঠুমরী এখন কি করছে। হয়ত নতুন জীবন নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখছে।
এরপর, অর্জুন প্রবলভাবে অনুভব করল, এতদিনকার বন্ধুত্বটা শুধুমাত্র বন্ধুত্ব ছিল না। ছোট ছোট ভাল লাগা, ছোট ছোট খুনসুটি- ঝগড়া - রাগারাগির পেছনে যে কত বড় একটা আবেগ মিশ্রিত অনুভূতি লুকিয়ে আছে.... যেটা আজ এই মুহূর্তে বুঝিয়ে দিল অর্জুন ঠুমরীকে ভালবেসে ফেলেছে।
পর পর বেশ কয়েকদিন দু' চোখের পাতা এক করতে পারেনি অর্জুন। একদিন সে মনস্থির করে, ঠুমরীকে সব মনের কথা বলে দেবে। কিন্তু ঠুমরী যদি আপত্তি করে, কিন্তু অর্জুন ঠুমরীকে ছাড়া থাকবে কি করে?
নাহ্। আর দেরী করা ঠিক হবে না। ফোনটা হাতে নিতেই যাবে, ঠুমরীকে কল করার জন্য। দেখল ঠুমরীই ওকে কল করেছে।
নিয়তির কি পরিহাস। ঠুমরী জানাল, ওর বিয়ে ২৫ শে শ্রাবণ ঠিক হয়ে গেছে। সেদিন থেকে ঠিক আর দু'মাস পরে। অর্জুন ভেবে পায় না, কি করা উচিৎ। আফসোস হয়, আর ক'দিন আগে যদি বলতে পারত।
- ক'দিন ধরেই দেখছি, ভীষণ অন্যমনস্ক তুই, কি হয়েছে বল তো?
- কিছু না।
- কিছু না বললেই হল, কিছু তো একটা হয়েছে, বল না....
- বললাম তো কিছু হয়নি।
- দাঁড়ি কাটিসনি, চুলগুলো বড় হয়েছে, রোগা রোগা লাগছে, একদম দেবদাসের মতন, প্রেমে পড়েছিস নাকি?
- বেশ করেছি, তোর কি তাতে?
- বাবা, রেগে যাচ্ছিস কেন?
- রাগার কি আছে? আমি তো.....
- আচ্ছা শোন, আমার সাথে কিন্তু তোকে শপিং এ যেতেই হবে, বুঝলি?
না বুঝে উপায় নেই, তাই বুঝে নেওয়াকেই ঠিক মনে করল অর্জুন। তবু মনকে বোঝাতে ইচ্ছে করছে, ঠুমরী যেখানেই থাকুক, ভালো থাকুক, সুখে থাকুক।
দিন যতই এগিয়ে আসছে, অর্জুনের মনে প্রলয় ঘটে চলেছে। নিজেকে এত অসহায় এর আগে কোনদিন লাগেনি। সবই ভাগ্য, ছোটবেলা থেকে কোনদিন এরকম কিছু মনে হয়নি। অথচ যেই না, ঠুমরীর বিয়ের কথা চলছে, ব্যাস্, মদন দেবের এ কি লীলাখেলা.. ধুর। ঠুমরীর ওপরও খুব রাগ হতে লাগল অর্জুনের। ও কি একটুও বুঝতে পারছে না? ওকে দেখে বোঝার অবকাশ নেই, যে ঠুমরী খুশি না। যাক্। ও ভালো থাকুক, অর্জুন তাতেই খুশি। এ নিয়ে আর বেশি না ভাবাই ভাল।
অবশেষে বিয়ের দিন চলে এল। এই কদিনে অর্জুন অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শিখেছে। অর্জুনের বর আনতে যাবার কথা। ঠুমরীর ভাই আর অর্জুনের দুপুর তিনটে নাগাদ বর আনতে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাধ সাধল শ্যামলেন্দু। সে অর্জুনকে ছাড়বে না।
- আরে, তুমি চলে গেলে আমি একা এদিকটা সামলাতে পারব না।
- তাহলে ওদিকে কি হবে, কাকাবাবু?
- সে আমি তাতানের সাথে ওর ছোট মামাকে পাঠিয়ে দেব। তুমি এদিকে এসো।
মনের মধ্যে আবার এলোপাথারি শুরু হয়ে গেল তাতানের। ভেবেছিল বাইরে থাকলে তাও ঠুমরীকে বউয়ের সাজে দেখতে হবে না। সেই ফেঁসে গেল।
সন্ধ্যে পেরিয়ে গেল। বর আসতে এত সময় লাগার কথা নয়। অর্জুন থাকতে না পেরে পায়চারি করছিল, হঠাৎ অর্জুনের কাছে ফোন এল, তাতানের।
ওদিক থেকে তাতান কাঁপা কাঁপা গলায় তাতান:
- দা, আমরা ফিরে আসছি, কোন বিয়ে হবে না।
অর্জুনের পা দুটো মনে হল কে যেন নাড়িয়ে দিল। ভূমিকম্পের মতন দুলে উঠল।
- কি বলছিস কি, কেন এসব?
- জানি না, এ বাড়িতে খুব খারাপ অবস্থা, ছেলেকে দুপুর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। থানা, পুলিশ করে যাচ্ছেতাই ব্যাপার। তুমি বাবাকে কি করে সামলাবে ভাবো। আমি তো কিছু ভাবতেই পারছি না।
- আচ্ছা আচ্ছা, তোরা চলে আয়, আমিও যে কি করি।
অর্জুন কি করবে ভেবে পায় না। কিভাবে কাকে কি বলবে। ভাবতে ভাবতেই কেটে যায় অনেকটা সময়। একবার ভাবছে বলে দিই, আবার ভাবছে ওরা আসুক একসাথে সামাল দেওয়া যাবে।
সবিস্তারে না শুনলেও তো নয়। হঠাৎ ওকে দেখতে পেয়ে শ্যামলেন্দু বলে উঠল,
- আরে এই তো, কি ব্যাপার বলো তো, ওরা এত দেরী করছে কেন? আমি ওদের মামাকে কতবার ফোন করছি, সে তো ফোন তোলেই না। তুমি একবার ফোন করে দেখবে?
- আমি করেছিলাম, ওরা আর আধঘন্টার মধ্যেই আসছে।
- আধঘন্টা? আরে তোমরা রেডি হও, বর এলো বলে..
অর্জুনের জিভ জড়িয়ে আসছে, কিন্তু সাহস সঞ্চয় করতে করতে আর ভাবতে ভাবতেই উলুধ্বনি, শাঁখ আর বর আসছে- বর আসছে রব উঠে গেল।
হঠাৎ অর্জুন একটা কান্ড করে বসল। চিৎকার করে বলে উঠল, ' বন্ধ করো, বন্ধ করো এসব, কেউ আসছে না, কোন বিয়ে হবে না।'
সবাই অবাক, হতভম্ব। এক হাত দূরে শ্যামলেন্দু কাছে এসে বলল, ' কি হয়েছে, বাবা? তুমি কি ঠাট্টা করছ?'
- না কাকাবাবু, আমি সত্যি বলছি, ভাই আমায় ফোন করে একথা বলল।
শ্যামলেন্দু হাত- পা কেঁপে পড়ে যাওয়ার জোগাড়। অর্জুন ধরে ফেলল। কাছাকাছি ক'জন এগিয়ে এল। হরি এক গ্লাস জল নিয়ে এল দৌড়ে। বাড়ির ভেতরে তখন কান্নাকাটি পড়ে গেল। ততক্ষণে তাতান আর ছোটমামাও চলে এসেছে। ছোটমামা হাতজোড় করে কেঁদে ফেলল, বলল, ' যে দায়িত্বটা দিয়েছিলেন, সেটা পালন করতে পারলাম না জামাইবাবু।'
গোটা বাড়িতে শোকের ছায়া। কে কাকে কিভাবে সামলাবে বুঝে উঠতে পারছে না। কিন্তু আসল ঘটনাটা কি হয়েছিল?
ছেলে দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর বলল, অনেক বেশি খাওয়া হয়ে গেছে, বাইরে পায়চারি করে আসি। সবাই ভাবল, কাছাকাছি আছে। তারপর যে যার ব্যস্ততায়। পাঁচটা বাজতে যায়, ছেলের পাত্তা নেই। আর বাড়ি ফিরল না। কি হয়েছে, কোথায় গেছে, তখন থেকে এই চলছে। তবু মেয়ের বাড়ি জানানোর সাহস হয়নি, এটাও মনে হয়েছে, বর নিতে আসার আগে যদি বর ফিরে আসে।
সব বৃত্তান্ত শোনার পর কুমুদ দুম করে ঠুমরীর ছোটমামাকে বলে উঠল,
- তা তুমি বাপু, ওদের বাড়ির আরেকটা ছেলেকে সঙ্গে করে আনতে পারলে না, মেয়েটা তাহলে এরম লগ্নভ্রষ্টা হত না।
তাতান বলে উঠল, ' পিসি এ তুমি কি বলছ? ওদের বাড়ির পরিস্থিতি তুমি কল্পনা করতে পারছ না, তাই এটা বলতে পারলে।
- পরিস্থিতি বোঝার কি আছে?
অর্জুন আর থাকতে পারল না,
' কি করে এটা বলছ পিসি? ঠুমরী কি একটা ফেলনা মেয়ে? ওর জীবনটা আগে? নাকি লগ্নটা? যার তার ঘাড়ে কি ওকে চাপিয়ে দেওয়া যায়?
- যাই বল বাপু। একটা নিয়ম নিষ্ঠা, আচার বিচার, শাস্ত্র- বিধান বলে তো ব্যাপার আছে। পস্তাবে সবাই দেখো, ও লগ্নভ্রষ্টা শুনলে কে বিয়ে করবে?
তাতান আর থাকতে পারল না।
- এমন করে বলছ, যেন এ সব কিছুর জন্য দায়ী আমার দি' ..
- ও দায়ী না হলেও, ওর কপাল তো অবশ্যই দায়ী।
আরম্ভ হল উপস্থিত সবার নানান মত, শাস্ত্র বিধান, নিয়ম নিষ্ঠা, পুরোহিত মশাইয়ের তাগাদা,, অর্জুন, তাতান, ছোটমামা, শ্যামলেন্দু, কুমুদ, কে কাকে কিভাবে সামাল দেবে ভেবেই পাচ্ছে না।
পুরোহিত মশাই এবার বলে উঠল : যা করবেন, তাড়াতাড়ি করুন, এরপর তো অনর্থ হয়ে যাবে। লগ্ন পেরোতে বেশি দেরী নেই।
অর্জুন এবার বেশ রেগে গেল, ' কি যা তা বলছেন বলুন তো, এটা কি গন্ডগ্রাম? ঠুমরীর একটা ব্রাইট ফিউচার আছে, ও কারোর গলগ্রহ নয়।
কুমুদ বলে উঠল, ' তা বাবা, অতই যদি তোমার দরদ থাকে, তুমি করো ওকে বিয়ে।'
গোটা বিয়েবাড়ি স্তব্ধ হয়ে গেল।
অর্জুন আমতা আমতা করে বলল, ' আমি? না মানে আমি কি করে...... মানে আবার এসব কেন.....
- দেখলে তো বাবা, নিজের বেলায় মুখ দিয়ে কথা সরছে না তোমার।
অর্জুন দেখল, এ তো মেঘ না চাইতেই জল। তাই একটু অবাক হয়ে গেছিল। তাও একটু অভিনয় না করলেই নয়।
বলে উঠল, ' না মানে, আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু কাকাবাবু, ছোটমা, ঠুমরী সবার মত থাকা দরকার।
শ্যামলেন্দু যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল, উঠে এসে অর্জুনের হাত ধরে বলল, ' তোমাকে জামাই হিসেবে পাব, এ তো আমার সৌভাগ্য। তুমি তো আমার ছেলে বাবা। আজ এত বড় একটা বিপদের দিনে আমার মান- সম্মান সব তোমার হাতে। উদ্ধার করো আমায়।
তারপর আর কি। দুজনের বিয়ে হয়ে গেল।
ফুলশয্যার রাতে অর্জুন যখন ঠুমরীর সামনে দাঁড়াল, ঠুমরী কেঁদে ফেলল। অর্জুন ঠুমরীকে নিজের বুকে টেনে নিল, অনেক কথা বলল, মনের কথা, যা কোনদিন হয়ত বলার সুযোগ হয়ে উঠত না। কিন্তু এভাবে সুযোগ হয়ে যাবে , সেটা স্বপ্নেও ভাবেনি। তার জন্য কিছুটা হলেও অর্জুন লজ্জিত।
- বিশ্বাস কর ঠুমরী, এটা এইভাবে হোক, আমি কখনও চাইনি।
ঠুমরী হেসে উঠল।
- হা হা, এটা তো আমার জন্যই হল।
অবাক হয়ে অর্জুন বলল,
- মানে?
- মানে আবার কি? তুই যে আমাকে ভালবাসিস, সেটা কি আমি বুঝিনি? কিন্তু আমি যে তোকে ভালবাসি সেটা তুই বুঝিসনি।
- আমি তো এখনও কিছু বুঝতে পারছি না।
- আমার পুরো প্ল্যান করে এটা হল।
- মানে কি এসবের? তুই তাহলে ছেলেটাকে বিয়ে করতে রাজি হলি কেন?
- কি করব, আর তো কোন উপায় ছিল না।
- ছিঃ ঠুমরী, তাই বলে মিথ্যে কথা? কত কি হতে পারত ভাবতে পারছিস? ছোটমা, কাকাবাবু অসুস্থ হয়ে যেতে পারত। সবাই কত কষ্ট পেল, কি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আমরা পড়েছিলাম....
সবাই কত কাঁদল, কাকাবাবু এত শক্ত মনের মানুষ, সে পর্যন্ত ভেঙে পড়ল। এটা কেন করলি তুই?
- আমার যে আর কোন উপায় ছিল না। তোর জন্য, তোকে পাওয়ার জন্য করলাম। আমরা যদি স্বাভাবিকভাবে বিয়ে করতে চাইতাম, আমাদের বিয়েটা হত? সবাই তোকে ভুল বুঝত। এ বাড়িতে সবাই তোকে খুব ভালবাসে, আমি চাইনি, তোর জায়গাটা নষ্ট হোক। আমার বাড়িতে তোকে সবাই সম্মান করুক, শুধু এটুকুই চেয়েছি। এটা যদি আমার অপরাধ হয়ে থাকে, তাহলে যা শাস্তি দিবি, মাথা পেতে নেব।
অর্জুন ঠুমরীকে কাছে টেনে নিয়ে বলল,
- শাস্তি তো দেবই, কি শাস্তি দেব, ভাবতেও পারছিস না।
- ধুর। পাগল একটা।
- হ্যাঁ, আমার পাগলিটার পাগল।
- তুই বুঝিস সেটা? কিচ্ছু বুঝিস না।
- আচ্ছা। কি করে করলি এসব? ছেলেটা বাড়ি থেকে উধাও হল কেন?
- উফ্। সেখানেও এক গল্প।
- কি গল্প আবার। কিডন্যাপ করিয়েছিস নাকি?
- তোর কি আমায় কিডন্যাপার মনে হয়?
- সে আর বলতে, তোর পক্ষে সব সম্ভব।
- আমি শুধু তোকেই কিডন্যাপ করতে চেয়েছিলাম। বিশ্বাস কর।
- করলি তো, সারাজীবনের জন্য। খুশি এখন? নে বল, কি করে করলি এসব?
- ছেলেটা একটা মেয়েকে ভালবাসে। কিন্তু বাড়ি থেকে মেনে নেবে না। আমিও নিজে ভেবে উঠতে পারছিলাম না। ভাবলাম তোকে হয়ত সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেললাম। বড়দের কথা ভেবে এতদূর এলাম। বিয়ের দিন সকালে এত কষ্ট হচ্ছিল। তোকে দেখে, তোর জন্য... তখন অনুভব করলাম, আমি তোকে ছাড়া থাকতে পারব না। আর তুই যে আমায় ভালবাসিস, সেদিন তোর চুল দাঁড়ি না কাটার কথা বলার সময়, তোর চোখের ভাষাটা আমি পড়ে নিয়েছিলাম। কোত্থেকে যে এত মনোবল আমি পেলাম আমি নিজেও জানি না। খালি জানতাম, আমার বুদ্ধু'টা কোনদিন আমায় বলতে পারবে না, আমাকেই কিছু একটা করতে হবে। তাই গায়ে হলুদের পর একটা ফোন করে ছেলেটাকে সব বললাম। ও বলল, ও এমন কিছু একটা করবে, যাতে আমার মান সম্মান নষ্ট না হয়। বলল, ভাগ্যিস এসব আগে বলে দিলেন, না হলে চার চারটে জীবন নষ্ট হয়ে যেত। জানিস, এত ভ্যাবাচাকা খেয়ে বলে ফেললাম, কিন্তু আপনার গায়ে হলুদটা যে আমি মেখে ফেললাম, এবার কি হবে? ছেলেটা এত্ত ভালো, বলল, ওটা একটা বন্ধুর উপহার হিসেবে স্বীকার করবেন। একদিন ওনার সাথে যোগাযোগ করতেই হবে, করবি তো অর্জুন?
- নিশ্চয়ই করব। একটা ধন্যবাদ তো ওনার প্রাপ্য। সত্যি, ওনার জন্যই আমরা এক হলাম। কিন্তু কুমুদ পিসি যদি প্রোপোজালটা না দিত, তখন কি করতাম?
- তখন আমি প্রোপোজাল দিতাম তোকে।
- হা হা।
- হাসিস না। তুই একটা গাধা।
- এ বাবা। আমি না তোর বর, বরকে কেউ গাধা বলে?
- কেউ না বলে, আমি বলব। গাধাকে গাধা ছাড়া কি বলব? কোথায় আমার বাবার সামনে হিরোদের মতন বলবে, আপনার মেয়েকে আমি বিয়ে করতে চাই। তা না। ছক সাজিয়ে দাও, ও শুধু খেলবে।
- তোর বাবাকে বলতে পারতাম, কিন্তু তোর পিসি? ওরে বাবা রে। নমস্কার।
- বেশ তো সামলাচ্ছিলিস, আবার ভয় কিসের।
- ওটা আমি না রে, পরিস্থিতি সামলেছে।
- সে যাই হোক, তুই গাধা। নেংটি ইঁদুর। এখন তো কেউ নেই এখানে, এখন আমায় প্রপোজ কর।
- ওসব আমার দ্বারা হবে না। তবে যদি হিরোগিরি দেখতে চাস তাহলে সেই মুভিটার হিরোটার ফুলশয্যার ঘরে দুজনে কি ন্যাকামো করছিল মনে আছে? ওটা সত্যিকারের করতে পারি।
ঠুমরী চড়, কিল, ঘুষি মারতে শুরু করল অর্জুনকে।
' শয়তান, অসভ্য, তুই নাকি ভাল ছেলে। কে বলে রে? আর আমি ন্যাকামির সিনেমা দেখি?'
- আহ্। কি লাগছে ঠুমরী। আমি না তোর বর। বিয়ের রাতে বর ঠেঙাতে নেই।
- বেশ করব। আমার বর, যা খুশি করব। ঠ্যাঙাব, সারাজীবন ঠ্যাঙাব।
- পোড়া কপাল আমার, এখন থেকে আদর খাওয়ার বদলে ঠ্যাঙানি খাব?
- কথা না শুনলে তো খেতেই হবে।
আমার মনে হয়, ওদের আর বিরক্ত করাটা আমাদের উচিৎ হবে না। ওদের আগামী জীবন সুখের হোক, এটাই সবাই মিলে কামনা করি।।
0 comments:
Post a Comment