সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.



 হঠাৎ আলো 

অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী 


পাহাড় থেকে নামতে নামতে হঠাৎ অঙ্কুর দেখল তখনও সন্ধ্যে নেমে আসেনি। কাঁধের স্যাকটাকে নিচে নামিয়ে সামনের নদীর জলে মুখ ধুতে লাগল। আশে পাশে তখনও পাহাড়ের লম্বা বিস্তার তার চোখে মুখে এমন ভাবে রয়েছে যে সে এখনও ভাবছে , বোধহয় সে সেই মুহুর্তেও পাহাড়ের ওপর দিয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে । 

সে দেখল একটি ছেলে তার কাছে এগিয়ে আসছে। সে কিছু বলার আগেই, অঙ্কুর প্রশ্ন করল- কিছু বলবি ? 

তাদের মধ্যে সব কথাই হিন্দি তে হচ্ছে । 

- বাবু আপনার কাছে বাতি আছে ?

- বাতি? 

অবাক হল অঙ্কুর । মনে মনে বলল- কেন? কিন্তু তার সামনে কিছু না বলে তার স্যাক থেকে বাতি বার করে ছেলেটার সামনে রাখল । ছেলেটি বাতিটাকে হাতে নিয়ে খুব দ্রুত সামনের একটা বাড়ির দিকে ছুটে গেল । অঙ্কুর অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে । কিন্তু না আর তো দাঁড়ানো যায় না। সে যেমনি স্যাকটাকে কাঁধে  চড়িয়েছে তখন আবার ছেলেটি তার কাছে দৌড়ে এল। 

- আবার কি ?

-দেশলাই । 

- চল তো দেখি কি ব্যাপার! 

অঙ্কুর ছেলেটির পিছনে পিছনে কাঠের ঘরের মধ্যে ঢুকতেই সে দেশলাই দিয়ে বাতি জ্বালিয়ে ঘরের ভেতর টা দেখেই অবাক হয়ে গেল । অঙ্কুর ভেবেছিল বোধহয় কেউ আছে! কিন্তু না কেউ নেই । শুধু কয়েকটা পাথর, গাছের পাতা, ভাঙ্গা গাছের কাণ্ড , একটা চারা গাছ, একটা গ্লাসে জল এই সব রাখা আছে ।অঙ্কুর অবাক হয়ে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল - এটা কি ? 

-আসলে আমার মা মারা যাবার পর, তার ছবি ঘরে রাখতে বারন করেছিল, মা বলেছিল- আমিতো এই প্রকৃতির মধ্যে মিশে যাব, তাই আলাদা করে আমার ছবি কেন রাখবি? এই প্রকৃতির মধ্যেই আমাকে দেখবি, ভাববি। তাই...

অঙ্কুরের পাহাড় , প্রকৃতি দেখার অভ্যাস, নিয়ম কোথায় যেন পাল্টে যাচ্ছে। আদ্যোপান্ত ভগবান না মানা মানুষটা কম্যুনিস্ট হয়েও তার দুটো হাত জোড় নাকরে কপালে না ঠেকিয়ে পারল না । হাতটা জোড় করেই ছেলেটির দিকে তাকিয়ে  বলল- দেশলাই টা দাও, নতুন করে আলো জ্বালাবো । 

1 comments:

ANKUR ROY said...

অসাধারণ হয়েছে অভিজিত। বিষয় , উপস্থাপন এবং ভাষা অনবদ্য হয়েছে। আমি গর্বিত যে গল্পটির মুখ্য চরিত্র এবং আমি সমনামী।