সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.

 সৌদামনি


বিজন রায়

তুমি যাহাকে দেখ , সে তাহার বাহিরের রূপ।যদি অন্তরের রূপটি প্রত্যক্ষ করিতে, ভালো না বাসিয়া
পারিতে না। গুরুজীর এই আপ্তবাক্যটি হরিসাধন এর মনে গাঁথিয়া আছে।তাই তিনি সর্বদা স্মিত হাস্যময়।রাগ হইলেও ক্রোধ সংবরণ করিতে জানে।

কিন্তু সৌদামনির সহিত প্রতিদিন তাহার দ্বৈরথ অনিবার্য।কারণ তাহাকে সে বুঝিতেই পারে না।অকৃতদার গুরুজীর অভিধানে কোন সমাধান নাই
----- কতদিন বলেছি এত ঝাল দিয়ো না।
--------- একটাই তো দিয়েছি।বেলডাঙার।
হরিসাধন ইতিমধ্যে দুই চামচ ডালে তিনখানি লংকা খুঁজিয়া পাইয়াছে।সৌদামনির এইরূপ মিথ্যা ভাষণে কোন অপরাধ বোধ নাই । পঁচিশ বৎসর ধরিয়া দেখিতেছে ,একই রহিয়া গেছে ।কখন কি বলে,কাহার সাথে কি জোড়ে , আবোল তাবোলেও মিলিবে না।

বিবাহের পরে প্রথম সিনেমা দেখিতে গিয়াছে।
বিরতিতে কহিল, ফুচকা খাইবে।ঘন্টা বাজিয়া গেল, খাওয়া আর শেষ হয় না।হঠাৎ একটি খালি ট্রাম দেখিয়া চেঁচাইয়া উঠিল --- চল, উঠে পড়ি।
ভিক্টোরিয়ায় চিনাবাদামের খোসা ছাড়াইয়া বাড়ি ফিরিতে রাত্রি দশটা।মা জিগ্যাস করিল, কোথায় গিয়েছিলে।সৌদামনি ফস্ করিয়া কহিল, কলেজ স্ট্রিট।ইহার তাৎপর্য হরিসাধন আজও বুঝিতে পারে নাই।

ইদানিং হাল ছাড়িয়া দিয়াছে। মেনি মাছকে কৈ মাছ বলিয়া চালাইলে, মানিয়া লয়। চাফিলা মাছকে ইলিশ বলিলে সামান্য আপত্তি করে। বয়সের সাথে সৌদামনির বিক্রমও বাড়িয়াছে। ঘর সংসার এর সকল দ্বায়িত্ব এখন তাহার ঘাড়ে। মসৃণভাবে চলিতেছে। হরিসাধন অফিস সর্বস্ব মানুষ।মাসের প্রথম তারিখে মাহিনাটি তুলিয়া দিতে পারিলে বাঁচে।তাহার ক্ষমতা এখানেই সীমাবদ্ধ।বাজার হাট ভুলিয়া গেছে।বাহিরে গেলেও তাই , সৌদামনি সাথে থাকিলে নিজেকে নির্ভার মনে হয়।

ভ্রমণ সাঙ্গ করিয়া সিমলা হইতে ফিরিতেছে।কলিকাতা বিমান বন্দর। মাল আসিতে অযথা বিলম্ব হইতেছে।সুবেশ যাত্রীরা ধৈর্যচ্যুত কিন্তু মৃদু ভাষী।সৌদামনি স্হির থাকিতে পারিল না।তাহার শুদ্ধ বাংলায় উচ্চ গ্রাম প্রতিবাদে কর্তৃপক্ষের টনক
নড়িল।বাহিরে আসিয়া অনেক সহযাত্রীই তাহাকে সাধুবাদ জানাইয়াছে। ব্যাংকেও দেখিয়াছে,কর্মীরা
দ্রুত পরিষেবা প্রদানে তৎপর।

আজ অফিস হইতে ফিরিয়া হরিসাধন প্রমাদ গুনিল।সৌদামনি মাথা ঢাকিয়া শুইয়া আছে।কি হয়েছে, --- কোন উত্তর আসিল না। চাদর তুলিতে গেলে এক ঝটকায় হাত সরাইয়া দিল। গায়ে যথেষ্ট উত্তাপ আছে। ডাক্তার কোথায় পাওয়া যায়, মনে করিতে পারিল না।নিজেকে দিশাহারা লাগিল । স্নানঘর হইতে ফিরিয়া দেখিল, গ্লাসে অর্ধেক জল ঢাকা দেওয়া।তিনটি ক্যাপসুলের একটি খাওয়া হইয়াছে।হরিসাধন হাঁফ ছাড়িয়া বাচিল।

ভালো খেলা আছে। চ্যানেল জানা নাই ।খাওয়ার টেবিলে একটি ফ্লাস্ক নজরে আসিল।পাশে তাহার কাপ ও প্লেট।বিস্কুটের কৌটাটিও আছে ।রিমোট টিপিতেই ,---- উল্লাস ধ্বনি । গোল !

0 comments: