সম্পাদকের কলমে
লেখা পাঠানোর জন্য
Total Pageviews
কোজাগরী
সাগরিকা বিশ্বাস
কোজাগরী চাঁদ আজ এসেছে বসে ঘরে
জনে জনে ভক্তিভরে ধনপূজা করে।
এরই মধ্যে কোথা থেকে জুটল বিপদ
কোনজন কাঁদে যেন , কচি এক বদ।
খানিক আগেই হল শুরু লক্ষ্মী আরাধন
এরই মাঝে করছে এসে সব শান্তি নিধন।
বস্তিবাড়ীর কানু এসে বসে আছে দোরে
কি যেন বলছে একা , শাঁখ বাজছে জোরে।
কাছে এসে বলি তাকে ‘কি হয়েছে শুনি !
টাকাকড়ি লাগবে নাকি’? ভয়ে প্রমাদ গুনি।
কেঁদে কানু বলেই চলে, ‘ মা গিয়েছে মারা’
তোমরা তার মনিব বলে কেউ নেই তোমরা ছাড়া ।
শেষ কাজটুকু করতে এখন লাগবে কিছু টাকা
কাঠ , কলসি ,খই লাগবে, চন্দন থাকবে আঁকা।
শুনে আমি রেগেই আগুন, ‘এই জানাতে এলি?
এমন এক পুজোর দিনে মরণ সংবাদ দিলি?’
আর যেন দেখিনা তোর চাঁদবদনখানি।
আমরা কিন্তু আচার বিচার ,শুভ অশুভ মানি।‘
পুজোর কাজের খই পয়সা ঘরেই রাখা আছে।
লুকিয়ে কিছু দিচ্ছি তোকে গিন্নিমা না জানে পাছে ।
এক বাটী খই ,খুচরো কিছু দিলাম কানুর হাতে,
সময় আর নেই একদম ,প্রসাদ দিতে হবে পাতে।
খানিক থেমে কানু এবার ছুটল প্রাণপণ
মাকে এখন বিদায় দিলেই হাল্কা হবে মন।
তাদের কাছে দুঃখযাপন নিতান্তই বেমানান
তাদের কাছে মালসা আলোয় জ্বলতে থাকে প্রাণ।
মাঝরাতে সেই কোজাগরী দাঁড়িয়ে আছে একা
কানুর মায়ের চৌকীটা আজ ভীষণ রকম ফাঁকা।
কচি বলে নেয়নি তাকে , শ্মশান নাকি ভয়।
চাঁদের নীচে চাঁদপানা মুখ , একাই চেয়ে রয়।
খই পয়সা দিয়ে আঁকা মায়ের যাওয়ার পথ
ঐ পথ দিয়েই মায়ের সাথে দেখতে গেছে রথ
চাঁদের নিচেই ছোট্ট কানু চাঁদ কুঁড়োতে থাকে
পয়সা যে হাতের চাঁদ, জেনেছে এই রাতে ।
সে বুঝেছে বেঁচে থাকা,মা মরেছে যেই
মা নেই বলে হাতের লক্ষ্মী পায়ে ঠেলতে নেই।
0 comments:
Post a Comment