সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

28,046
By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.

 শৈশবের মিসিং ডায়েরি

শান্তনু মাইতি


- নিরুদ্দেশের রিপোর্ট টা কোথায় লেখাবো স্যার? 

- নিরুদ্দেশ! নিখোঁজ? 

- না মানে ইয়ে কিছু হারিয়ে টারিয়ে গেলে কিভাবে...

- ও বুঝেছি। তা, হারানো না চুরি? 

- মানে স্যার? 

- বলছি জিনিসটা নিজে হারিয়েছেন না অন্য কেউ হরণ করেছে? চুরি বোঝেন না? যত্তসব। 

- সে অনেক কথা, এক বাক্যে কি করে বলি স্যার? 

- FIR হবেনা। জি.ডি করে যান, দেখছি। 

- স্যার জি.ডি মানে ইয়ে ঠিক... 

- আচ্ছা পাবলিক মশাই! থানায় প্রথম নাকি? জি.ডি হল জেনারেল ডায়েরি। আপাতত আপনার কেসটা লিখে জানান, তারপর দেখছি।

ভাগ্যিস, বড়বাবু জানতে চাননি - কি হারিয়েছে? শুনলে হয়তো আমার এই মিসিং ডায়েরি লেখাই  হতো না। ব্যস্ত জীবনের রোলার-কোস্টারে বসে কারই বা সময় আছে হারানোর হিসেব রাখার। অশান্ত অসহিষ্ণু এ সময়ের ধুসর শূন্যতা মেখে, এক অনিশ্চিত অনিবার্য ভবিষ্যতে বিষাদভ্রমণ ছাড়া উপায় থাকতো না।

আমি শৈশবকে খুঁজছি ধর্মাবতার! ছেলেবেলা হারিয়ে যাচ্ছে ক্রমশঃ। একশো সাঁইত্রিশ কোটি জনসংখ্যার দেশে, ছাপ্পান্ন কোটি কাঁচামাটির ছেলেবেলা আজ এক অনিশ্চিত সংকটের মুহূর্তে। স্মার্ট ডিজিটাল দুনিয়ার হাতছানি আর মোহ এড়িয়ে যেটুকু শৈশব অবশিষ্ট ছিলো, তাও মুছে গেছে গত দুবছরের কোভিড অতিমারীর পরে। আজকের শৈশব, ছেলেবেলা, মেয়েবেলা - আরও বেশি যান্ত্রিক, অসহায়, বোবা আর ফোবা (FOBA - Fear of being alone)। স্কুলে দিদিমণিদের আদর মাখা শাসন নেই, বন্ধুদের সাথে খুনসুঁটি নেই, নেই নির্মল প্রকৃতির ছোঁয়ায় প্রাণ জুড়োন। মন খারাপের বিকেলবেলায় কার্টুন আর ভিডিও গেমের জালে আটকে হারিয়ে যাচ্ছে, হারিয়ে গেছে কত অপু দুর্গার কাশবনের দুপুর - আর ফিরে পাওয়া যাবে না তাকে। ভয়, ভ্যাকুয়াম আর ভার্চ্যুয়াল রিয়ালিটির ভৎসনাতে ভোঁকাট্টা হয়ে শুধুই ভেসে যাওয়া। কবেকার সেই ঈশ্বরী পাটনির ডিঙি থেকে শুরু করে দেশপ্রিয়র মহাষ্টমীর অঞ্জলি অবধি বাঙালি তো  হাতজোড় করে শুধু চেয়ে এসেছে "মাগো, আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে।" তাই বলে খেলার মাঠ শূন্য করে ভিডিও গেম হাতে? জানি না জীবনের কোন সে নিদারুণ প্রয়োজনে, আমসত্ত্ব দুধে ভরা কাঁসার বাটি ফেলে, ছুটে চলার ভিড়ে, স্পিডোমিটারের উর্ধমুখী কাঁটায় শৈশব এখন ইউ-টার্ণ হীন হাইওয়ে ধরে শহরমুখী। রাঙা মাটির পথের ধারে পদ্মদীঘি, শাল-শিমুলের ছায়া, কাশফুল, দুর্বা-শিশিরের পাঁচালি তার পিছু ডাকে। ইউটিউব, অ্যালেক্সায় বুঁদ কচিকাচার কানে সেই ডাক কি আর পৌছোয় আজ? 

নিম দাঁতনের সেই সকাল আর নেই, ভোরের আলাপের তানপুরা বাজে না কোনো ঘরে, বুলবুলি কলকের মধু খেয়ে যায় একা, কেউ জানেনা প্রজাপতির ডানায় কোন ফুলের গন্ধ মাখা, শালুক পুকুরে পানকৌড়ির স্নান, সবুজ ধানক্ষেতের আল বেয়ে হাঁটা পথ, চড়ুই-কোকিল-ঘুঘুর ডাক, সূর্যের রঙ মাখা দিনের প্রথম খেয়া, ঝাউবনের শিরশির কাঁপণ, ছিপ ফেলে বসে থাকা অলস দুপুর, গুলি-ডাংগুলি-কিতকিত, কানামাছি-লুকোচুরির বিকেল - সবই হারাচ্ছে মালিক! আর হয়তো ফিরে পাব না কক্ষনোও। বাগদি বুড়িও চুবড়ি ভরে শাক তুলতে আসেনা পুকুর ধারে। রাতের জোনাকিরাও আজ অবুঝ অভিমানে মুখ লুকিয়েছে অন্ধকারে।

আজকের এই জেনারেশান গাছে চড়ে না, কাদা মাখে না, ধুলোয় গড়াগড়ি খায় না, বৃষ্টিতে ভেজেনা, জানে না ডুব সাঁতার কি বস্তু! সুতো বেঁধে ফড়িং ওড়ায় না, ব্যাঙাচী ধরে শিশিতে ভরে রাখে না, খেলনাবাটির সংসার, পুতুলের বিয়ে বাড়ি,পেন্সিল দিয়ে জোড়া ক্যাসেটের রিল, বইয়ের পাতায় শুকনো ফুল, বৃষ্টির রাতে পিদিমের নিভুনিভু আলোয় ঠাকুরমার কোল ঘেঁসে ভুতের গল্প, আন্টেনা ঘুরিয়ে সারা বিকেল টিভির ছবি ঠিক করার ধারাবিবরণী , দুপুরের আচার চুরি, হিমের রাতে মায়ের বানানো কাঁথার ওমে শোবার সুখ -আর নেই। তখন লুডো, ষোলোগুটি, চাইনিজ চেকার, দাবা, ক্যারামে দিব্যি কেটে যেতো দিন, এখন মোবাইল স্ক্রিনে না চোখের আরাম না মনের। আমরাই বোধহয় শেষ প্রজন্ম যারা লাইব্রেরি চিনতাম। Kindle Version এ মনের সে হরষ নেই। পুরনো বইএর সোঁদা গন্ধ ক্রমশঃ যাচ্ছে হারিয়ে । 

জন্মদিনে পায়েস আর নাড়ুই ছিলো শো-স্টপার। ব্ল্যাক ফরেষ্ট, বাটার স্কচ, স্ট্রবেরির আড়ম্বর ছিলো না। বন্ধুরা আসতো, মন ভরে, থালা সাফ করে খেতো মাংস ভাত। বই-পেন-ক্যাসেটের উপহারে ভরে উঠতো মনের লাইব্রেরি। সুপারম্যান-বার্বিডলের খ্যাতিতে আজকাল বই উপহার দেয় কজন আর? সহজপাঠ, টুনটুনির বই, ক্ষীরের পুতুল, আবোল তাবোল, হ-য-ব-র-ল, ঠাকুরমার ঝুলি, পঞ্চতন্ত্র-ঈশপ - মনে পড়লেই যেন রুপকথার সময় শুরু। দত্তি-দানো, ডাইনি-পরী, সুয়োরানী-দুয়োরানী, চোর-ডাকাতের ছবি আঁকতুম মনে মনে। জানিনা সেই মৌতাত আছে কিনা পেপা পিগ, মার্সা আর ডোরেমনে।

সাবান জলে গুলে উড়িয়েছি বুদবুদ, কাগজের চরকি হাতে ছুটেছি খোলা হাওয়ায় নদীর পাড়ে। ধানকাটা ঘাস-খড়-নাড়ার মাঠে খেলেছি খো-খো। সাইকেলের টায়ার ছিলো আমাদের গাড়ি, বাবার সাইকেলে হাফ-প্যাডেলে নিজে নিজে শেখা ভারসাম্য। গুলতি দিয়ে পাড়া আম-জামরুল, ভরদুপুরে বৃষ্টিপিছল মাঠে ফুটবল, বিকেলে বাবার পিটুনি আর রাতে মায়ের আঁচলে আদরের ইশারা। সেই স্বাধীনতা কোথায় আজ? আজ, না চাইতেই স্যান্ডউইচ, ম্যাগি, কর্ণফ্লেক্স, ডোনাটস্, বার্গার, পিজা আর মোমো। তখন মায়ের হাতেই ছিলো পি.সি. সরকার। খই-বাতাসা, ঘুগনি-মুড়ি, চিড়ে-দই, চাপাটি, সুজি, রুটি-গুড়, খুদ কিংবা ফ্যানভাত-আলুসেদ্ধর গরম ভাপে ছিলো আত্মহারা তৃপ্তি। স্যুপের ঘনত্বে নয়, ঝাল-ঝোল-অম্বলের রসায়ন ছিলো ছোট্টবেলার পাওনা। আমাদের কুঁয়োতলা ছিলো। বালতি দড়িতে টেনে তুলে পায়ে-মুখে জল - শান্তি! টিউবওয়েলে মুখ লাগিয়ে তৃষ্ণার সুখ। কাঁঠালের বিচি পোড়া, তালের আঁটির গজা থেকে কচ্ছপের ডিম - কিই না ছিলো তখন।

খুব মনে পড়ে সেই আইসক্রীম ওয়ালার ডাক, বাবার হাত ধরে প্রথম ট্রেনে চড়া - জানালার ধারের সিট, আবদারের দিলখুশ আর গুড়বাদাম। মন উদাসী স্কুলের প্রেয়ার, তুলকালাম বেঞ্চি দখল, অঙ্কের ক্লাসে বেঞ্চের তলায় লুকিয়ে খেলা পেন লড়াই, কাটাকুটি, টিফিনের ভাগ করে খাওয়া মশলামুড়ি, ফুচকা, কামরাঙা, চোর-পুলিশ।  আপনি তো জানেন হুজুর - কি হারাচ্ছি। সে সব কি দিন ছিল - জন্মদিনে পায়েস ছিল, স্কুল পালিয়ে সিনেমা ছিল, খাতার মলাটে ছিলো প্রিয় বন্ধুর চিঠি, খেজুর গাছে রস, পুকুর পাড়ের অবাক ডাহুক, সজনে গাছের ডালে মাছরাঙা, মায়ের হাতে বানানো পিঠেপুলি, পাটালি গুড়, রয়্যাল গুলি, ঘুড়ি-মাঞ্জা-লাটাই, চড়কের কদমা আর গুড়ের বাতাসা, বটের ঝুরিতে দোল, কাদাজলে কাগজের নৌকো, প্রেশার কুকারে বানানো বড়দিনের কেক, আম কুড়ানো কালবৈশাখী, শীতের দুপুরে নরম রোদ গায়ে মেখে কড়াইসুটি চুরি, চাঁচুড়ির আলু-বেগুন পোড়া, নেতাজীর জন্মদিনে প্রভাতফেরি শেষে সস্তার কেকের স্বর্গীয়  স্বাদ, শিশু উৎসব, পলাশের ফুলে দোল, প্রথম পশলা বৃষ্টিতে ভিজে স্নান, ক্যাসেটে সুমন-অঞ্জন-শিলা-নচি, দশমীর ধুনুচি, মায়ের হাতে বোনা সোয়েটার, কোডাকের রিলে তোলা কিছু অস্পষ্ট যৌবন, হাতে রাখা হাত, প্রথম চুমু, প্রথম প্রেমের ভুল, শিউলি, জীবনানন্দ, শেষের কবিতা, সত্যজিৎ, প্রজাপতি, মেমসাহেব, স্পর্শ আর শরীরের আবিষ্কার, বিরহ আর ক্ষত, ডায়েরি লেখা -- বেফিকরে বাউন্ডুলে সে সবদিন আর ফিরে পাবো কি হুজুর? সময়ের পায়ের বিন্যাসে,আমাদেরই অবুঝ সন্ন্যাসে, ঠাকুরদা-ঠাকুমা-মামা-কাকা-যৌথ সংসার, জানিনা কোন সে ঈর্ষায় ক্রমশ নিউক্লিয়ার।

দয়া করে একটু ভাবুন হুজুর, কি অনর্থটাই না হচ্ছে আজকাল। যেই না একটা শিশু জন্ম নিলো - সোজা 'জেনারেশন জেড' এ সামিল। ল্যাক্টোজেন খেয়ে একটু মিটিমিটি করেছে কি আমরা ধরিয়ে দিচ্ছি মুঠোফোন, YouTube, ট্যাব, I-Pad  - ব্যাস! ডাইরেক্ট ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি টু মাকড়সার জালে। সহজ সরল চোখগুলো আকাশের সামিয়ানা না খুঁজে, প্রকৃতির স্পর্শ-গন্ধ ভুলে, স্মার্ট উদ্বায়ী দ্রুত এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতের খোঁজে। অথচ জীবনের সবচেয়ে সুন্দর, অক্ষয় অমর স্মৃতিগুলো তৈরী হওয়ার কথা ছেলেবেলাতেই। বয়সে আমরা যতই দুই কুড়ি, তিন কুড়ির দিকে এগোই না কেন, প্রাণের মধ্যে লুকিয়ে রাখি এক শিশুমন। শৈশব যতো প্রানবন্ত, ওঠাপড়ায় ভরা, এই বাচ্চা মনটা তত বেশি বাঁচে। সহজে পোড়েনা জীবনের আঁচে। দুপুর জেগে মাঞ্জা দেবার পরও নিজের ফোড়চা ঘুড়িকে বাতাসে দোল খেতে দেখা, এও এক অন্য শেখা। খেলতে গিয়ে পা কেটে গেলে, নিজেরাই লাগিয়ে নিতুম চুড়চুড়ি গাছের রস। আমার ব্যাট, তোর উইকেট - খেলার মাঠের ঝগড়া মিটিয়েছি নিজেরাই। কানামাছি খেলতে গিয়ে যাকে ভালোবাসি তাকেই ছুঁয়ে ফেলা, নোটস দিতে গিয়ে হাতের মুঠোয় গুঁজে দেওয়া চিঠি - সেই সব সোনায় মোড়া দিনগুলো সব আবছা হয়ে যাচ্ছে স্যার, সেইটুকু খুঁজতেই আজ আপনার কাছে আসা …সম্পূর্ণ নিখোঁজ হবার আগে একটু খুঁজে দেখবেন প্লিজ?

কি আর বলবো ধর্মাবতার! 

তেত্রিশকোটি দেবতার ভারতবর্ষে, তিরিশ লাখ অভিভাবকহীন ছেলেবেলা। কোভিড অতিমারীতে অনাথ প্রায় দুলক্ষ শিশু। আমি হয়তো একটু আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছি। আপনিই বলুন স্যার, ছেলেবেলা সত্যিই কি হারায়নি? হারিয়ে যাচ্ছে না? সামাজিক অভিযোজনের মোহে আমরা কি যান্ত্রিক হয়ে পড়ছি না? প্রগতির স্বার্থে, জীবনের সহজ সমীকরনের বিলাসিতায় কিছু হারাবেই, হয়তো অনেককিছুই। কিন্তু এখনোও যা ফিরিয়ে দিতে পারি, এখনও যা হারায়নি সম্পূর্ণভাবে সেই অক্সিজেনটুকুও কি দেবো না আমরা আজকের ছেলেবেলাকে? শৈশবের বাতাবরণ তৈরি করে দিতে পারে একমাত্র অভিভাবকরাই, কচিকাচারা শুধু  সিন্দুক ভরে জমিয়ে রাখবে স্মৃতি। সত্যি যদি তা পারি, টাইম মেশিনে চেপে, নস্টালজিয়া নৌকোতে বসে ওরাও বলবে - 

"কেমন আছিস ছেলেবেলা? তোকে বড্ড মিস করি!"

14 comments:

Unknown said...

অসংখ্য ধন্যবাদ। লেখাটিকে স্থান দেবার জন্য।

Unknown said...

Thank you for taking through the memory lane... So nostalgic... Lovely style.

Unknown said...

দারুণ হয়েছে । আমি এই দলেই।Nostalgic

Unknown said...

Awsome sala.... nostalgic hoye porlam

Unknown said...

👍👍👍👍👍 seamless...

Haraprasad Singha said...

ফিরবো বললে ফেরা যায় না কি ?

Unknown said...

অসংখ্য ধন্যবাদ

Unknown said...

যায়...
তার আগে বলো কে থাকে অপেক্ষায়

Unknown said...

ধন্যবাদ বন্ধু

Unknown said...

Khub sundar... boddo bhalo laglo

rajat said...

Khub Sundar..Keep it up buddy..Waiting for more

Unknown said...

Khub vlo laglo pore...

Unknown said...

Amazing Santanu...

Unknown said...

Khub sundar....