সম্পাদকের কলমে

নারায়ণ দেবনাথ- সত্যি বলতে কি একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি হল। একটা বিশাল বড় অধ্যায়, যেখানে বাবা/ মা, ছেলে/ মেয়ে বা দাদু/দিদা, পিসি, ঠাম্মা সব এক হয়ে গেছিল । চলে গেলেন শরীরের দিক থেকে কিন্তু সারাজীবন রয়ে গেলেন মনে, চোখে আর স্বপ্নে। কার্টুন তাও আবার নিখাদ বাংলা ভাষায়, বাংলা চরিত্র নিয়ে, কিন্তু সেই চরিত্র আবার খুব সাহসী। উনি সাহস দেখিয়েছিলেন বলেই বাংলার ঘরে ঘরে বাঁটুল, হাঁদা-ভোঁদা পৌঁছে গেছে। নারায়ণ দেবনাথ -এর প্রতি #গল্পগুচ্ছ এর পক্ষ থেকে সশ্রদ্ধ প্রণাম । ভাল থাকবেন, যেখনেই থাকবেন। আমরা কিন্তু আপনার দেশেই রয়ে গেলাম । নমস্কার সহ অঙ্কুর রায় সংখ্যার সম্পাদক অভিজিৎ চক্রবর্ত্তী প্রধান সম্পাদক

লেখা পাঠানোর জন্য

আপনার লেখা পাঠান আমাদেরকে
golpoguccha2018@gmail.com

Total Pageviews

By Boca Nakstrya and Gologuccha . Powered by Blogger.

 এখন আমি যা

অঞ্জলি দে নন্দী
গত কয়েক দিন ধরে আমার দেহ কোরোনা ভাইরাস আক্রান্ত। বন্ধ রুমে শয্যাশায়ী। বুকের ভেতর এক অদ্ভুত শব্দ সদা সর্বদাই বেরিয়ে আসছে। চোখে ঝাপসা দেখছি। কানে সাফ শুনছি না। কথাও আটকে যাচ্ছে। নড়াচড়া করার ইচ্ছা ও শক্তি কোনোটাই নেই। মুঠো করে আমার জীবনসঙ্গী আমাকে ঔষধ সেবন করাচ্ছে। ওআরএস মিশিয়ে জল ঢালছে। প্রতিটি মুহূর্ত যেন যুদ্ধ করছে। কোন অপ্রয়োজনীয় কথা নেই। নিখুঁত সেবা। সমস্ত কাজের মধ্যে যেন এক সুনিশ্চিত অপ্রকাশিত প্রতিজ্ঞা যে ..... আমার পত্নীকে শীঘ্রই বিছানা ছেড়ে দাঁড় করাতে হবে.....মাঝে মাঝেই দূর থেকে দেখছে। আমি দেখছি....এক অলৌকিক দৃষ্টি তার লক্ষ্যে। এর আগে এই লুক কখনও দেখিনি। তেমন করে প্রেম ভালোবাসা এতো বেশি করে কখনওই আন্দাজ করতে চেষ্টা করিনি। সংসার সামলাতে সামলাতে কখন যে সময় দরিয়া পার হয়ে এসেছি। কত তুফান একাই মোকাবিলা করার মত শক্তিও ধরেছি। আজ হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছি। বয়স স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে কতটা প্রভাব ফেলে রেখে গেছে তা কোনদিন ভাবিনি ও। তা যাক আজ বোধ হয় একটু কাঁচের হৃদয় দোয়াত ধোবার সময় এসেছে। নিজে হাতে রান্না করে ও চিকেন স্টিউ একটি বোলে নিয়ে চামচে করে একটু একটু একটু করে চুইয়ে চুইয়ে চুইয়ে ও আমার মুখে দিচ্ছে। ফিরে গেলাম পিছনে। সমুদ্র মন্থনে এই প্রেমামৃত পান করেই তো দেবতা মৃত্যু জয় করেছিল। হ্যাঁ, এরই নাম তো সম্বন্ধের সুধা স্বাদ। আমি নিশ্চিত যে আমি অমরত্ব লাভ করছি। সব ছিল যা ছিল না তাও পেলাম। দরদর করে পসিনা ছুটছে। তবুও কত্তার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত হচ্ছে। ......সবটুকু খেতেই হবে......সামান্য একটু সুপ তা খেতে যে কত সময় নিলুম। ওর কিন্তু কোন বিরক্ত লাগছে না। পুরোটাই ফিনিশ করিয়ে মুখটা সাফ করালো। মৃদু হেসে বলল, " তোমার সাদা অপরাজিতায় আজ টোটাল ন'টা ফুল ফুটেছে। " আমি ওঠার চেষ্টা করছি। মাথাটা ভোঁ ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছে। ঘ্যাঙ ঘ্যাঙ ঘ্যাঙ করে আবার কাশ্ছি। তবুও উঠলাম। ও ব্যালকনির ডোরটা খুলল। উঁকি দিয়ে দেখলাম। ফুলগুলো ও যেন ঠিক ওর মতোই এক অলৌকিক দৃষ্টি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে.....ওদের কাছে জানতে চাইলে কী ভুল হবে? আমি বেঁচে থাকবো অমর জীবন নিয়ে তোমাদেরই তরে গো। এ জীবন ঈশ্বরের অস্তিত্ব রক্ষায় নয়। তোমাদের আন্তরিকতার প্রবল বেগে। কি সত্যি তো! .....

0 comments: