সম্পাদকের কলমে
লেখা পাঠানোর জন্য
Total Pageviews
পুজোর
গল্প
[বনফুল—এর গল্প
অনুসরণে]
ব্রত রায়
জীবন বিমার দালাল আমি
সিমলা থেকে ফিরছি
সফর ছিল ব্যর্থ বলে
আক্ষেপে চুল ছিঁড়ছি!
একটা বড় লাইফ—পলিসি
হাসিল করার লক্ষ্যে –
এসেছিলাম। ক্ষুণ্ন
মনে এখন ট্রেনের কক্ষে –
বসে আছি! হঠাৎ দেখি
তিন রূপসী কন্যা
দু’জন বোধ হয় ভগ্নি
হবেন, তাদের মাতা অন্যা!
স্বীকার করি, এই
জীবনে এমন রূপের ঢল যে
আর দেখি নি! বুক
শুকালো, কাঁপছে আমার কলজে!
সুদর্শন এক যুবক
ছিলেন এই নারীদের সঙ্গে,
‘কোথায় যাবেন?’
প্রশ্ন করি, জবাব দিলেন, ‘বঙ্গে!’
এই বলে ফের মন
দিয়েছেন ম্যাগাজিনের ভিত্রে
তার মনোযোগ এক নায়িকার
অর্ধনগ্ন চিত্রে –
পড়ল মনে, সেই কাগজেই
বিজ্ঞাপনও ছাপল –
আমার অফিস! মাথায় তখন
ফন্দি নতুন চাপল!
বলছি তাকে, দেখুন কত
বোনাসটোনাস দিচ্ছে
ফ্রেশ পলিসি অনেক
আছে—নিন্ না যেমন ইচ্ছে!
যুবক বলেন, ‘মায়ের
সাথেই আলাপ করুন চান তো’
মা—জননী আমার কথা
শোনেন আদ্যোপান্ত!
বলেন, ‘আমার
জীবনবিমার দরকারই তো হয় না,’
‘কিন্তু লোকে
পুত্র—স্বামীর জন্যে বিমা লয় না?
বিপদ হলে আসবে কাজে,
সহজ বিমার শর্ত’ –
‘আমার স্বামী
মৃত্যুঞ্জয়, বিমার তো নেই অর্থ!’
‘গল্প রেখে তোমরা বরং
ঘুমিয়ে নিলেই পারতে’,
ওঠেন বলে ছিলেন যিনি
শুয়ে আপার বার্থে!
দেখেই আমি চমকে উঠি!
মাথায় হাতির শুঁড় যে!
গণেশ ঠাকুর! বাজল
বুকে আগমনীর সুর যে!
‘বঙ্গে গেলে
পাঁচ—ছ’টা দিন ঘুম হবে একবিন্দু?
উচিত নাকি ট্রেনের
ভেতর নিই ঘুমিয়ে দিনদুই?’
গাড়ল আমি! মাথায় আমার
পড়ল তখন বাজ যে
বুঝে গেলাম সব চলেছেন
বঙ্গ নামক রাজ্যে!
সামনে পুজো! হই প্রণিপাৎ
তক্ষুনি সাষ্টাঙ্গ!
ক্ষমা করুন, হোক না
আমার ভুলের বোঝা সাঙ্গ!
দুর্গা হাসেন, ‘দোষ
কর নি, কও নি কথাও ভুল তো
ভালোই হত কেউ যদি তা
আগেই কানে তুলত!
দোষ কিছু নেই কারোর
নামে ইন্সিওরেন্স থাকলে
ভালোই হবে পুজোর বিমা একটা করে রাখলে!’
0 comments:
Post a Comment